Currently set to Index
Currently set to Follow
Tips and Tricks

ছাগলের ভিটামিন ঔষধ (খাওয়ার নিয়ম সহ)

ছাগলের জিবন শেষ করে যতই ভিটামিন মিনারেল দিন সহজে কাজে দিবে না।

শেষ বয়সে যখন আর ঠিকমত দেখতে পাচ্ছেন না। দাত গুলো সব পড়ে গেছে।হাড়ের ব্যাথা শুরু হয়ে গেছে তখন যদি কোন বৃদ্ধকে আপনি ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ান, রুচির জন্য জিংক সিরাপ দেন। হাড়ের চিকিৎসায় ক্যালসিয়াম দেন কোন কাজ হবে?????হবে না। স্যালাইন লাগবে।

অথচ যৌবনে যদি প্রতিদিন না হোক ২ দিন পরপরও এই ঔষধ গুলো দেওয়া যেত তবে বৃদ্ধ বয়সে ইনজেকশন আর স্যালাইন লাগতো না। মানুষ বলেন আর গরু ছাগল বলেন সবার বেলায় একই কথা। ভিটামিন এ ক্যাপসুল শিশুদের দেওয়া হয়। স্যালাইন লাগেনা। লাগলেও মুখে খাওয়ালেই হয়।

আমি প্রত্যেক খামারি ভাইদের বলছি,,,ছাগল গর্ভবতী হওয়ার আগেই নরমাল খাবারের পাশাপাশি নিয়মিত ভিটামিন জাতীয় খাবার দিন। আজকের বাচ্চা ছাগল কাল আপনার খামারের নিরব সম্পদ।
এক বোতল জিংক সিরাপ অবশ্যই খামারে রাখবেন। রুচির জন্য অনেকে শুনি বিট লবন খাওয়ায়। লাগবেনা।

খাদ্যাভাস পরিবতর্ন, হঠাৎ গরম ইত্যাদি নানা কারনে গরুর পাতলা পায়খানা হতে পারে। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে জিংক খাওয়ান। একদম চলে যাবে ইনশাআল্লাহ। কৃমিনাশক খাওয়ার পর আবশ্যই জিংক খাওয়ান।

[1] Rena-Breeder Premixছাগলের ভিটামিন ঔষধের নাম

এই ভিটামিন ঔষধে যে সকল ভিটামিন রয়েছেঃ

ভিটামিন এ = 15000000 আইইউ
ভিটামিন ডি 3 = 3000000 আইইউ
ভিটামিন ই = 25 গ্রাম
ভিটামিন কে 3 = 4 গ্রাম
ভিটামিন বি 1 = 2.5 গ্রাম
ভিটামিন বি 2 = 8 গ্রাম
ভিটামিন বি 6 = 4 গ্রাম
ভিটামিন বি 12 = 12 মিলিগ্রাম
নিকোটিনিক অ্যাসিড = 35 গ্রাম
ক্যালসিয়াম-ডি প্যান্টোথিনেট = 15 গ্রাম
ফলিক এসিড = 800 মিলিগ্রাম
বায়োটিন = 150 মিলিগ্রাম
কোবাল্ট = 500 মিলিগ্রাম
তামা = 10 গ্রাম
আয়রন = 40 গ্রাম
আয়োডিন = 400 মিলিগ্রাম
ম্যাঙ্গানিজ = 60 গ্রাম
দস্তা = 60 গ্রাম
সেলেনিয়াম = 150 মিলিগ্রাম
ডিএল-মেথিওনিন = 50 গ্রাম
এল-লাইসাইন = 30 গ্রাম
ক্যালসিয়াম = 723.66 জি

[2] Becevit-Vet Powder

স্কয়ার ফার্মাসিটিক্যালস এর এটি ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। এই ভিটামিন পাউডারটিতে Vitamin B-Complex & Vitamin C রয়েছে। অর্থ্যাৎ, এতে ভিটামিন বি এর B1, B2, B6, B12 এই চারটি উপাদানই রয়েছে। এর সাথে রয়েছে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ভিটামিন ”সি”।ছাগলের ভিটামিন ঔষধের নাম

[3] Vimeral

হলো ছাগলের ভিটামিন প্রিমিক্স। যেটি ভারতের ভারব্যাক কম্পানির তৈরি করা। এর মধ্যে ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন বি টুয়েলভ থাকে।

ছাগলের ভিটামিন ঔষধের নাম

ছাগলের ভিটামিন ”এ” শরীরের কতটা গুরুত্বপূর্ণ?

  • ভিটামিন এ শরীরের বৃদ্ধি করে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে।
  • শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • ভিটামিন এ প্রজনন ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।
  • ভিটামিন এ ছাগলের দুধ বৃদ্ধিতে সহায়ক।
  • চোখের দৃষ্টিকে বাড়িয়ে তোলে।

এর জন্য নিয়মিত অনুসারে একটা মা ছাগল ভিটামিন এ দেওয়া উচিত। যেমন গাভীন অবস্থায় ভিটামিন এ দিলে বাচ্চা সুস্থ থাকে এবং বাচ্চা হওয়ার পরেই ভিটামিন প্রয়োগ করতে পারলে দুধ বৃদ্ধি করবে এবং ছাগল খুব তাড়াতাড়ি তার শরীরের ডেফিসিয়েন্সি সেটাকে রিকভার করে নেবে।

ছাগলের ভিটামিন ”ডি” শরীরে এর গুরুত্ব কি?

  • ভিটামিন ডি হারকে শক্ত করে।
  • শরীরকে বৃদ্ধি করে।
  • ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস কে সংরক্ষণ করে রাখে।

আর এইজন্যই ছাগল গাভীন অবস্থায় থাকলে ভিটামিন-ডি দেওয়া খুবই জরুরি। গাভীন অবস্থায় ভিটামিন ডি প্রয়োগে বাচ্চার বৃদ্ধি হয়, বাচ্চার শক্ত হয় এবং মায়ের শরীরে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস সংরক্ষণ থাকে।

ছাগলের ভিটামিন ”ই” শরীরের কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে?

  • ভিটামিন এ পায়েন খুরকে বৃদ্ধি করে।
  • প্রজনন ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে।
  • শরীরের মাংসপেশি কে মজবুত করে তোলে।

ছাগলের ভিটামিন ”বি টুয়েলভ” এর ভূমিকা কি?

  • ভিটামিন বি টুয়েলভ পাচনতন্ত্রের শক্তি বৃদ্ধিতি সহায়ক।
  • শরীরের নার্ভ মাংসগুলোকে মজবুত করে তোলে।
  • শরীরে রক্ত কণিকা তৈরিতে সহায়ক।

এই সমস্ত ভিটামিন আমরা একসঙ্গে দিতে পারি ”ভিমেরাল” নামক ছাগলের ভিটামিন ঔষধ এর মাধ্যমে। একটা ছাগলকে আমরা 5ml প্রতিদিন খাওয়াতে পারিঃ

● মনে রাখবেন যে কোন ভিটামিন যখন ছাগলকে দেবেন বা কোন গরুকে দেবেন সেটা যেন রাত্রেবেলা দেওয়া হয়। রাত্রে দিলে খুবই ভাল কাজ করে। ছাগল বা গরুকে যে কোন ভিটামিন প্রয়োগের আগে একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে রাখতে হবে আর সেটা হচ্ছে যে কোন ভিটামিন প্রয়োগ এর আগে তাকে ডিওয়ার্মিং এবং লিভার টনিক দেওয়া উচিত। এর পরে কিন্তু যে কোন ভিটামিন আপনারা করতে পারেন।

● আমরা যারা ছাগল পালন করি আমরা প্রত্যেকেই চিন্তাভাবনা করে ছাগল পালন করে আমরা কিছু ইনকাম করব কিন্তু ছাগলের ফার্ম থেকে ইনকাম করতে হলে আমাদেরকে ছাগল সব সময় সুস্থ রাখতে হবে এবং সুস্থ রাখতে হলে আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ক্যালসিয়াম লিভার টনিক এবং ভালো খাবার ছাগলকে খাওয়াতে হবে।

● যদি আমরা সঠিক সময়ে ছাগলকে লিভার টনিক ভিটামিন ক্যালসিয়াম না খাওয়াই তাহলে ছাগোল বিভিন্ন ধরনের পড়বে এবং ছাগল অসুস্থ হবে ছাগল যদি ফার্মে ঘনঘন অসুস্থ হয় ছাগলের যদি ঠিক না থাকে তাহলে আজ থেকে ইনকাম করা খুবই মুস্কিল এর জন্য আমাদেরকে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ক্যালসিয়াম খাবার খাওয়াতে হবে।

● সর্ব প্রথমে আমাদেরকে ছাগলকে কৃমির ঔষধ খাওয়াতে হবে। সেটি প্রত্যেক মাসে দুই মাস অন্তর খাওয়াতে হবে। যদি আমরা সঠিক সময়ে ছাগলের কৃমির ঔষধ না খাওয়াই তাহলে ছাগলের শরীর ভালো থাকবে না। ছাগলের খাওয়ার রুচি কমে যাবে এবং ছাগল ঘনঘন করবে এর জন্য সকলকে সঠিক নিয়ম মত কৃমিমুক্ত করাতে হবে।

● তারপর দিতে হবে লিভার টনিক আপনারা যে কোন লিভার টনিক দিতে পারেন যেমন হিমালায়ান কোম্পানির তারপর হচ্ছে এ ধরনের লিভার টনিক গুলো আপনারা ছাগলের কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পর ব্যবহার করতে পারবেন বা যে কোন সময় ছাগলকে লিভার টনিক খাওয়াতে পারবেন কোন অসুবিধা নেই।

● লিভার টনিক খাওয়ানোর সময় যে কোন একটা ক্যালসিয়াম দিতে হবে এবং লিভার টনিক দিতে হবে কন্টিনিউ ৮ দিন। লিভার টনিক কমপ্লিট হয়ে যাওয়ার পর দিতে হবে ভিটামিন খাওতে পারেন। আপনি অবশ্যই পশু ডাক্তারে পর্মার্শ মত পরিমাণে বা ওষুধে গায়ে লেখা প্রয়োগ পরিমাণ দেখে খাওয়াবেন।

● ভিটামিন বি কমপ্লেক্স কখন দিবেন? আপনারা সব সময় দিতে পারেন এবং যেকোন ট্রিটমেন্ট চলাকালীন ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খাওয়াতে হবে বা ইনজেকশন দিতে হবে। ধরুন ছাগলের জ্বর হয়েছে ও ছয় থেকে সাত দিন ছাগলের ট্রিটমেন্ট করতে হবে। এই ছয় থেকে সাত দিনের মধ্যে আপনাদেরকে ইঞ্জেকশন ফরমে বা লিকুইড ফর্মে ছাগলকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খাওয়াতে হবে। ছাগলের ট্রিটমেন্ট করার সময় ছাগলের শরীর দুর্বল হয়ে যায়। ছাগলের শরীর দুর্বল না হয় এর জন্য ছাগলকে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স দিতে হবে।

● ছাগলকে নিয়মিত ডিওয়ার্মি করাতে হবে। ছাগল ছোট হোক বড় হোক বা প্রেগন্যান্ট সবার জন্য আলাদা আলাদা ওষুধ পাওয়া যায়, সেটিই আপনারা ব্যবহার করতে পারেন।

● যদি ছাগলকে দিয়ে ডিওয়ার্মি করা না হয় তাহলে ছাগলের কোন খাওয়াই শরীরে কিভাবে লাগবে না, কোন ভিটামিনের ছাগলের শরীরে ঠিকঠাকভাবে লাগবে না। এজন্য সর্বপ্রথমে ছাগলকে ডিওয়ার্মি করাতে হবে, ছাগলের শরীরের যে কৃমি দূর করতে হবে তারপরে ভিটামিন, ক্যালসিয়াম, লিভার টনিক দিতে হবে।

● যদি সঠিক সময়ে সঠিক সময়ে ডিওয়ার্মি  না করা হয় ছাগল প্রেগনেন্ট হবে না এবং বাচ্চা হবে না। যদি ফার্মের বাচ্চা না হলে কিন্তু লাভ করা মুশকিল। বন্ধুরা ফার্ম থেকে ইনকাম পেতে হলে ছাগল পরিচর্যা খুব ভালো করে করতে হবে। সঠিক সময়ে লিভার টনিক, ভিটামিন, ক্যালসিয়াম এবং সঠিক পরিমাণে ছাগলকে খাবার দিতে হবে। তবেই থেকে ইনকাম করা সম্ভব হবে এবং সবসময় ছাগল সুস্থ রাখার চেষ্টা করতে হবে। ছাগল যেন অসুখে না পড়ে সেদিকে লক্ষ রাখতে।

প্রিয় দর্শক কেমন লাগলো আমাদের আজকের এই আলোচনা অবশ্যই কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাবেন। পোষ্টটি পড়ার পর যদি ভালো লাগে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দেবেন। আজকের আলেঅচনা এখানেই শেষ করে দিচ্ছে। পরবর্তীতে নতুন কোন টপিক নিয়ে হাজির হবে সকলে ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন খামারিয়ান এর সাথেই থাকুন।

ছাগলের বাচ্চা জন্মের পর দীর্ঘ সময় প্লাসেনটা পড়েনা কেন। calcium deficiency নিয়ে একটা ছাগল মা হলে এই সমস্যাটা হতে পারে। হঠাৎ দুধ কমে যাওয়াও ক্যালসিয়ামের অভাবে হতে পারে। ছাগল বা গাভীটা অসুস্থ হবার পর যতই ক্যালসিয়াম দেন না কেন আর সেই রিকভারি হবেনা। এমন অনেক উদাহরন আছে গত বার ২০ লি. এবার ৮ লি. দিচ্ছে।

কোপা স্যালাইনেও লাভ হয়না। অথচ যদি সময় মত অল্প অল্প করে প্রতিদিন কিছু ক্যালসিয়াম খাওয়ালে এমনটা হতনা।গাভি বা ছাগলের এক কেজি দুধ তৈরি হতে প্রায় ১.৫ গ্রাম calcium লাগে।

blood এর একটা ক্যালসিয়ামের লেবেল থাকে। ওখান থেকে calcium আসে। ফলে ছাগল বা গাভীকে তার খাবার থেকে calcium নিয়ে ব্লাড লেবেল ঠিক রাখতে হয়। ৬ মাস পরপর calcium স্যালাইন দিলেই লাভ কি।

আমরা সবচেয়ে কম দামে বেশি দুধ আসা করি। খরচ কমাতে হবে। আবার মাল্টি ভিটামিন গুলোর প্রাইস অনেক বেশি। গরুকে ঔষধ খাওয়ানো আর ভিটামিন খাওয়ানো কে এক মনে করলে হবেনা। অসুখ হলে কেবল ঔষধ খাওয়াবেন। আর ভিটিমিন প্রতিদিন কিছু পরিমান খাওয়াবেন। হোক সেটা বাজার থেকে কিনে অথবা খাদ্যমান হিসাব করে।

খাবার ১০ কেজির জায়গায় ২০ কেজি দিয়ে দেখুন তো দুধ কত বাড়ানোর যায়।বেশি বাড়েনা। ১০কেজির সাথে সুষম খাবার দিন, প্রতিদিন একই রকম খাবার দিন। দুধ প্রডাকশন একই থাকবে।প্রতিদিন আপনি পোলাও মাংস খেতে পারবেন। স্বাস্থ্যকর না। গরুর জন্যও খাবার মেনুটা স্বাভাবিক রাখেন। চালের কুড়া থেকে হঠাৎ সয়াবিন প্রয়োজন নাই।

কথাগুলো কতটুকু scientific তা জানি না। আমি ডাক্তার না। তবে আমি এই কাজ গুলো করি এবং ভাল ফল পেয়েছি।

খাবার খরচ আমি পুরোপুরি control করেছি।আমি আরও ৪ খামারিকে সাথে নিয়ে খাবার কিনি বর্তমান বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম।‌ জিংক,ক্যালসিয়াম,ভিটামিন AED3,B-complex, এনজাইম আমার formula তে বানাই।
পাশাপাশি তাদেরও দেই।‌‌ সবাই খুশি।

লেখক Md Waliduzzaman Sarder Vai

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button