ব্যোমকেশ সমগ্র PDF Download (All) 💖
বই: ব্যোমকেশ সমগ্র pdf download
ব্যোমকেশ বব্জীর সহিত আমার প্রথম পরিচয় হইয়াছিল সন তেরশ’ একত্রিশ সালে । বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলি শেষ করিয়া সবেমাত্র বাহির হইয়াছি। পয়সার বিশেষ টানাটানি ছিল না, পিতৃদেব ব্যাক্কে যে টাকা রাখিয়া গিয়াছিলেন, তাহার সুদে আমার একক জীবনের খরচা কলিকাতার মেসে থাকিয়া বেশ ভদ্রভাবেই চলিয়া যাইত । তাই স্থির করিয়াছিলাম, কৌমার্য ব্রত অবলম্বন করিয়া সাহিত্যচচায় জীবন অতিবাহিত করিব। প্রথম যৌবনের উদ্দীপনায় মনে হইয়াছিল, একান্তভাবে বাগ্দেবীর আরাধনা করিয়া বঙ্গ-সাহিত্যে অচিরাৎ যুগান্তর আনিয়া ফেলিব। এই সময়টাতে বাঙালীর সন্তান অনেক ভাল স্বপ্ন দেখে_যদিও সে-্বপ্ন ভাঙিতেও বেশি বিলম্ব হয় না। কিন্তু ও কথা যাক
। ব্যোমকেশের সহিত কি করিয়া পরিচয় হইল এখন তাহাই বলি । যাঁহারা কলিকাতা শহরের সহিত ঘনিষ্ঠভারে.-গ্লরিচিত, তাঁহাদের মধ্যেও অনেকে হয়তো জানেন না যে এই শহরের বেন্দ্রস্থলে এমন একটি পল্লী-আছে, যাহার এক দিকে দুঃস্থ ভাটিয়া-মাড়োয়ারী সম্প্রদায়ের বাস, অন্য দিকে খোলার বস্তি.এরং তৃতীয় দিকে তির্যক্চক্ষু পীতবর্ণ চীনাদের উপনিবেশ | এই ত্রিবেণী সঙ্গমের মধ্যস্থলে ঘৈ +ব-দ্বীপটি সৃষ্টি হইয়াছে, দিনের কর্ম কোলাহলে তাহাকে দেখিয়া একবারও মনে হয় না যে ইহার কোনও অসাধারণত্ব বা অস্বাভাবিক বিশিষ্টতা আছে। কিন্তু সন্ধ্যার পরেই এই পল্লীতে এক আশ্চর্য পরিবর্তন ঘটিতে আরম্ভ করে ।
আটটা বাজিতে না বাজিতেই দোকানপাট সমস্ত বন্ধ হইয়া পাড়াটা একেবারে নিস্তব্ধ হইয়া যায় ; কেবল দূরে দূরে দু’একটা পান বিডির দোকান খোলা থাকে মাত্র । সে সময় যাহারা এ অঞ্চলে চলাফেরা করিতে আরম্ভ করে, তাহারা অধিরাংশই নিঃশব্দে ছায়ামূর্তির মত সঞ্চরণ করে এবং যদি কোনও অজ্ঞ পথিক অতর্কিতে এ পথে আসিয়া পড়ে, সে-ও দ্রুতপদে যেন সম্তরস্তভাবে ইহার এলাকা অতিক্রম করিয়া যায় । আমি কি করিয়া এই পাড়াতে আসিয়া এক মেসের অধিবাসী হইয়া পড়িয়াছিলাম, তাহা বিশদ করিয়া লিখিতে গেলে পুঁথি বাড়িয়া যাইবে । এইটুকু বলিলেই যথেষ্ট হইবে যে, দিনের বেলা পাড়াটা দেখিয়া মনে কোনও প্রকার সন্দেহ হয় নাই এবং মেসের দ্বিতলে একটি বেশ বড় হাওয়াদার ঘর খুব সন্তায় পাইয়া ‘রাক্যব্যয় না করিয়া তাহা অধিকার করিয়াছিলাম । পরে যখন জানিতে পারিলাম যে, এই পাড়ায় মাসের মধ্যে দুই তিনটি মৃতদেহ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় রাস্তায় পড়িয়া থাকিতে দেখা যায় এবং নানা কারণে সপ্তাহে অন্তত একবার করিয়া পুলিস-রেড় হইয়া থাকে, তখন কিন্তু বাসাটার উপর এমন মমতা জন্মিয়া গিয়াছে যে, আবার তল্লিতল্লা তুলিয়া নৃতন বাসায় উঠিয়া যাইবার প্রবৃত্তি নাই । বিশেষত সঙ্ক্যার পর আমি নিজের লেখাপড়ার কাজেই নিমগ্ন হইয়া থাকিতাম, বাড়ির বাহির হইবার কোনও উপলক্ষ ছিল না; তাই ব্যক্তিগতভাবে বিপদে পড়িবার আশঙ্কা কখনও হয় নাই । আমাদের বাসার উপরতলায় সর্বসুদ্ধ পাঁচটি ঘর ছিল, প্রত্যেকটিতে একজন করিয়া ভদ্রলোক থাকিতেন। তাঁহারা সকলেই চাকরিজীবী এবং বয়স্থ ; শনিবারে শনিবারে বাড়ি যাইতেন.
byomkesh samagra pdf download link:
byomkesh samagra pdf Drive Download