উগ্র হিন্দুত্ববাদ Pdf Download আসাদ পারভেজ
বন্ধুরা, আজকে নিয়ে আসছি উগ্র হিন্দুত্ববাদ আসাদ পারভেজ Pdf free Download latest version link Google Drive । এছাড়াও, সব সময়ের মত বই পড়ুয়া বন্ধুদের অনুরোধ ক্রমে online reading সহ উগ্র হিন্দুত্ববাদ পিডিএফ ডাউনলোড লিংক আপডেট করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি।
লেখক আসাদ পারভেজ এর উগ্র হিন্দুত্ববাদ বইয়ের বিবরণঃ
- বই:
উগ্র হিন্দুত্ববাদ - লেখক(Author)
আসাদ পারভেজ - প্রকাশনী(Publisher) ও ধরণ(type)
সাহিত্যানুশীলন - ফাইল ফরম্যাট (file format):
epub bangla, MOBI, kindle bangla , Bangla Pdf free Download(ফ্রি পিডিএফ ডাউনলোড) - সর্বশেষ প্রকাশ (Last Published Date)
5th Edition Print, 2021 সাল - মোট পৃষ্ঠা (Pages)
১২৩ পেজ - অঞ্চল ও ভাষা (Content Region & Language)
বাংলাদেশ - ফাইল সাইজ:
মেগাবাইট
উগ্র হিন্দুত্ববাদ আসাদ পারভেজ Pdf Book Review(বই রিভিউ ও পর্যালোচনা):
বুক রিভিউ: “উগ্র হিন্দুত্ববাদ; ধর্মীয় বিদ্বেষের নগ্ন নজির।”
জীবনে এরকম ২য় কোন বইয়ের রিভিউ পরম উচ্ছ্বাস আর ভাবাবেগ দিয়ে মনের অন্তর্দৃষ্টি খুলে লিখতে বসেছি!
বইটির রিভিউ লিখতে গিয়ে বার বার শরীরের লোমকূপ খাড়া হয়ে যাচ্ছে! মূলত বইটিতে হিন্দুত্ববাদীদের উগ্র সম্প্রদায়ের মুখোশ উন্মোচিত করা হয়েছে তাদের পৈশাচিক পরিকল্পনার নির্বিচারি নৃশংস প্রয়োগের ফ্রাংক ডেসক্রিপশন নিয়ে।
তারা একে একে নানান ছলচাতুরী নিয়ে কিভাবে বারে বারে মুসলিম জাতির জাতিসত্তায় আঘাত হেনেছে সেটার প্রমাণ পাবেন বইটির প্রতিটি লাইনে!
☞ বইয়ের কাভার পেইজ উল্টানোর সাথে সাথে যে কথাগুলি দৃষ্টিগোচর হবে তার কিয়দংশ হলো–
“প্রতিনিয়ত বনি আদমের সংখ্যাগত বৃদ্ধি জগৎ-সংসারকে সমৃদ্ধ করার কথা। ধর্মতত্ত্ব আর ধর্মীয় চর্চাবোধ মানুষের সম্প্রীতিতে শিকড় মজবুত করার কথা। অথচ সাম্প্রতিককালে ধর্মীয় অনুশাসন আর তার বিকৃত ধর্মতন্ত্র মানুষের জীবনকে নিষ্পেষিত করে যাচ্ছে। বিশ্বজোড়া ভোগবাদী সংস্কৃতি ও সমস্বত্বতা গড়ে তোলার জের হিসেবে মৌলবাদী তৎপরতা বেড়েছে।”
☞ মোদি’র পরিচয় দিতে গিয়ে ৭০ পৃষ্ঠায় থাকা কথাটি নিরেট খাটি বলে আমার মনে হয়েছে–
“১৯৫০ সালে গুজরাট রাজ্যের মহেসানা জেলার বড়নগর নামক স্থানে ‘ঘাঞ্চি তেলী সম্প্রদায়ের এক নিম্নবর্গের পরিবারে’ জন্ম নেওয়া প্রমোদ বালক মোদি।”
☞ ভারতের একজন সেনাপ্রধান নিয়ে লেখকের ১২৯ পৃষ্ঠার এই মন্তব্য অত্যন্ত যৌক্তিক বলে মনে হয়েছে– “সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত একজন অতি জ্ঞানী জেনারেল কি না জানি না, তবে তার যে আবোলতাবোল কথা বলার অভ্যাস রয়েছে–তা স্পষ্ট। তিনি এত বেশি জ্ঞানী যে, কোন কথাটি পাবলিক সম্মুখে আর কোন কথাটি সামরিক অপারেশনাল বোর্ডরুমে বলার কথা– তা–ও ভুলে যান।”
☞ সনাতন ধর্মীয় প্রধান কিতাব ‘মহাভারত’ কিভাবে রচনা করা হয়েছে তা জানলে অবাক হবেন, যেটির বর্ণনা রয়েছে ৩৯ পৃষ্ঠায়–
“সত্যি কথা বলতে, ব্রিটিশরা ভারতের দখল নেয় মুসলমানদের হাত থেকে বাংলার ভূমি মাড়িয়ে। যার কারণে ব্রিটিশদের সার্বক্ষণিক ভয় ছিল, কখন যে মুসলমানরা তাদের থেকে সাম্রাজ্য নিয়ে নেয়। তাই তাদের চূড়ান্ত পরিকল্পনার বিষয় ছিল, বাংলার দখলকে দখল না দেখিয়ে অধিকার হিসেবে উপস্থাপন করা এবং হিন্দুদের নিজেদের অনুকূলে রেখে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেওয়া। এরই অংশ হিসেবে তারা হাজার হাজার বছরের পুরোনো কাহিনীকে অনেক ক্ষেত্রেই বিকৃত করে ১৭৮০ সালে মহাভারত নামে একখানা গ্রন্থ বানায়। আজকের দিনে এই মহাভারত গ্রন্থটিকে হিন্দুরা নিজেদের মূল ধর্মগ্রন্থ হিসেবে মেনে নিয়েছে।”
☞ RRRS সম্পর্কে যে লোমহর্ষক তথ্য তিনি সন্নিবেশ করেছেন তাতে একজন সচেতন পাঠকের আর দ্বিধা থাকবেনা উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হীণ সকল ষড়যন্ত্র কতটা দুর্বিষহ আক্রমণ করেছে এবং তাদের ভবিষ্যত প্ল্যান কী!
বস্তুত বলতে দ্বীধা নেই যে, মোদির হাতে ডেকোরেট হওয়া RSS (রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ) উঠেপড়ে লেগেছে ভারতকে মুসলমান মুক্ত করার দুঃসাহসে। নানাবিধ ষড়যন্ত্র আর ফাঁদ বরবারের মতই সফল হয়ে মোক্ষম ভূমিকা রেখেই চলছে যার কিঞ্চিৎ অনুমান পাওয়া যায় ৪৮ পৃষ্ঠার এই মন্তব্য থেকে–
“ হিন্দুত্ববাদে মগ্ন থাকা RSS ক্ষমতার চাবি হাতে পেয়েই অহিন্দু বিশেষ করে মুসলিম দেশবাসীর ওপর চাপিয়ে দিলো স্টিম রোলার। ক্ষত-বিক্ষত হতে লাগল ভারতের মাটি ও মানুষ।”
লেখকের এই কথাটি পড়ে মনে পড়তে লাগলো ১৯২২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ধূমকেতু পত্রিকায় নজরুলের লেখা ‘আনন্দময়ীর আগমনে’ কবিতার শেষ আট লাইনের কথা; যে লাইনগুলির কারণে নজরুলের এই কবিতা নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো–
“আর কতকাল থাকবি বেটি
মাটির ঢেলার মূর্তি আড়াল,
স্বর্গ যে আজ করেছে নরক
অত্যাচারি শক্তি চাঁড়াল!
দেব শিশুদের মারছে চাবুক
বীর যুবকদের দিচ্ছে ফাঁসি;
ভূ-ভারত আজ কসাইখানা
আসবি কখন সর্বনাশী!”
☞ শুধু গরু নিয়ে তাদের উগ্রতা কতটা চরম পর্যায়ে তা আনন্দবাজার পত্রিকার রেফারেন্সে ৫১ পৃষ্ঠায় উঠে এসেছে যা তারা মনে করে–
“ ‘যারা গোহত্যা করবে, তাদের হত্যা করা পূণ্যের কাজ।’
অথচ এই মায়ের চামড়া দিয়ে জুতা বানিয়ে তারা পায়ে দেয়, মাকে বিক্রি করে এবং মায়ের (গরু) মৃত্যুর পচা দেহ রাস্তায় পড়ে থাকা অবস্থায় শকুনে খেলেও তাদের দৃষ্টিপাত হয়না।”
☞ ১৩১ পৃষ্ঠার এই কথাটি খেয়াল করুন–
“রাওয়াত পাকিস্তান ও মুসলমান দুটি শব্দকে সমার্থক শব্দ ভেবেছেন। তার ভাবনা, কোনো অঞ্চলের ৯টি জেলায় মুসলসানের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া মানেই ওই এলাকা পাকিস্তান হয়ে যাওয়া–যা খুবই কল্পনাবিলাসী বক্তব্য। ”
বস্তুত, তারা এমনটাই মনে করেন। এটা কোন ভুলের সমীরণে নয়; বরং বিদ্ধেষের জেরে হুশজ্ঞানশূন্য মনের বেখেয়ালি প্রকাশ!
☞ শুধু কি তাই? তাদের অসংখ্য ষড়যন্ত্র, উগ্রতা, অত্যাচারের লোমহর্ষক বর্ণনা বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠা জুড়েই বিদ্যমান গ্রহণযোগ্য তথ্যসূত্রের ভিত্তিতে। বাবরি মসজিদ ভাঙ্গার ব্যাপারে ভারতের সাবেক মূখ্যমন্ত্রী কল্যান সিং এর এই কথাটি পড়ে দেখুন, ৫২ পৃষ্ঠায়–
“একজন কন্ট্রাক্টরকে বাবরি মসজিদ ভাঙার দায়িত্ব দিলে তা ভাঙতে প্রায় দেড় মাস লাগত, সেখানে সংঘ পরিবারের কর সেবকরা পাঁচ ঘন্টায় ভেঙে ফেলে ঐতিহাসিক স্থাপনাটি।”
✓ বইয়ের ৬৩ পৃষ্ঠার কথাটি দেখুন– “হিন্দু নেতারা নির্ভেজাল থাকার কথা বলে অর্ধসত্য মিথ্য আর বিকৃত স্লোগানের মাধ্যমে অনুগামীদের উত্তেজিত ও বিভ্রান্ত করে।”
(আমার মনে হচ্ছে নেতারা পুরোপুরি মিথ্যা আর অসত্য তথ্যের সন্নিবেশ ঘটান যে কোন ব্যাপারে হরহামেশা; উপরন্তু তাদের নানামুখী ষড়যন্ত্রের বিষবাষ্পে আকাশ আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে!)
✓ বইটি খুব নির্মমভাবে বুরহান ওয়ানীর কথা মনে করিয়ে দেয়। স্থাপনা ধ্বংস বাদেও মুসলিম স্থাপনার নাম বদলে দেওয়ার একটা হিরিক আমি যখন ইণ্ডিয়াতে ছিলাম তখন দেখেছি। যেমন, ‘আহমেদাবাদ’ কে তারা ‘এ্যামদাবাদ’ বলেন। এছাড়া আরো অনেক মুসলিম স্থাপনার নাম তারা বিকৃত করার অব্যর্থ প্রয়াস চালান। আশা করি লেখক পরের সিরিজে এসব নিয়েও তথ্যভিত্তিক উপস্থাপনা রাখবেন।
✓ পরিশেষে এতটুকুই বলবো,
বইটি কেবল উগ্রপন্থি হিন্দুত্ববাদীদের মুসলিমদের বিরুদ্ধে নেওয়া কিছু কৌশলী চক্রান্তের নির্মোহ লিখিত ডকুমেন্টারি বুক।
বইটির এক পর্যায়ে জেনেছি, এসব নিয়ে লেখক সিরিজ আকারে বই সাজাবেন। গুম হয়ে যাওয়ার আগেই যেন লেখক Asad Parvez স্যার উনার এই সুনিপুণ কাজটি সমাধা করতে পারেন সেই প্রত্যাশা রাখছি..!
স্বল্প মূল্য দিয়ে কিনে আনা রত্ন লেখক আসাদ পারভেজ এর উগ্র হিন্দুত্ববাদ বইয়ের রিভিউ ও পর্যালোচনা করতে বেশ ভালই লাগছে, যেখানে বইটির প্রকাশনীর প্রিন্ট কোয়ালিটি ও প্রচ্ছদ ভালই ছিল।
নিঃসন্দেহে সংগ্রহে রাখার মত এ বইয়ের পরিচয় জানা অর্থাৎ বইটির ভূমিকা লিখেছেন লেখক আসাদ পারভেজ নিজেই, যেখানে লেখক যথার্থ লেখনশৈলী উপহার দিয়েছেন।
উগ্র হিন্দুত্ববাদ বইটিতে অনেক শিক্ষণীয় ব্যাপার আছে যা আমাদের জীবন রাঙানোর জন্য হলেও সুপাঠ্য ও বন্ধু মহলে উপহার দেওয়ার মত সবথেকে বেশি প্রাসঙ্গিক বই হবে বলে মনে হয়। আমার খুব প্রিয় একজন লেখক আসাদ পারভেজ, সুযোগ হলে উনার এই অনবদ্য বইটি পড়বেন। এই বই থেকে যেমন কিশোর পাঠকরা পাবে রোমাঞ্চকর অনুভূতি তেমনি অন্য পাঠকরা পাবেন কঠিন বাস্তবতার সন্ধান। লেখক আসাদ পারভেজ এর দূরদর্শিতা লেখার ঘটনা পাঠক মনে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছে এবং তাঁর নিখুঁত উপস্থাপন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠককে একটা টেনশনের মধ্যে রাখতে পেরেছে ও উগ্র হিন্দুত্ববাদ বইটিকে বাস্তব করে তুলেছে।
ভালোবাসার এ উগ্র হিন্দুত্ববাদ বইটি যেন আপনার সুসময় ও দুঃসময়ের বন্ধু হতে পারে এ শুভ কামনা।
উগ্র হিন্দুত্ববাদ বইয়ের এই সংস্করণটি মোটামুটি ছোট, খুব দ্রুত পড়ে শেষ করা যায় যার কারণে কাহিনী নিয়ে আমি তেমন কিছু লিখলাম না। লেখক আসাদ পারভেজ এর এই বই পড়ে এবং আমার বন্ধু-বান্ধবদের সাথে আলোচনা করে আমার যে ধারনা হলো তা থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে লিখলাম। উগ্র হিন্দুত্ববাদ বই টা না পড়লে এই কঠিন সত্যের সম্মুখীন হওয়া কিংবা রোমাঞ্চকর সেই অনুভূতি পাওয়া সম্ভব নয়।